সামান্তা মিজান || তোমার সাথে তবু আমার জন্ম অভিমান

যে তুমি আমায় দেখেছো আড়ালে বেঁধেছো বাঁধন ছলে,
যে তুমি আমায় নিঃশব্দে ডেকেছো তবু কিছু না বলে।
যে তুমি আমায় স্বপ্নে গেঁথেছো সীমাহীন মায়াজালে,
সে তুমি আবাস গড়েছো কোথাও কুহকের আঁধারে।
নিশাচর সব পাখিরাও যখন ফেরে নিজের সংসারে।
ঝুপ করে নামে সাঁঝ,
এক এক করে সব পথে পথে নিয়ন বাতি জ্বলে,
ঘাম গায়ে শ্রমিকেরা সব মলিন শাড়ির আঁচলে মুখ মোছে।
কেরানী গোছের চাকুরে কিংবা তিন তিনটে মেসে
ভাত রাঁধা সোহেলীর মা
ফুটপাত ঘেঁষে দাঁড়িয়ে হাতে নিয়ে নোংরা থলে,
হাতরে বেড়ায় কিছুটা ভালো সবজি বাসি পচার তলে।
হতভাগা ওই কেলে হিংসুটে বেড়াল
বাকি দুটোকে চাটা মেরে,
একলাই খায়”বেগুনি ফ্রক আর কোকড়া চুলের” দেওয়া বিস্কুট দুটো কেড়ে।
শোরগোলে ঘেরা মত্ত পৃথিবী,
কালো কাচের ভেতর সুগন্ধি প্রসাধন মাখা
সুপ্ত তরুণীর কপালে অসোয়াস্তির রেখা।
রুক্ষ চুলের, ধূলো পায়ের বিধ্বস্ত তরুণ
কুৎসিত এক গালি প্রাক্তনকে দিতে গিয়ে
চোখে ভাসে তার কাজল চোখের মেয়ের
সেই স্নিগ্ধ হাসি,নিজের দীর্ঘশ্বাস হারায়
নিকোটিনের কড়কড়ে ধোঁয়ায়
রাঙা চোখ দুটো তবু তাকে খুঁজে যায়।
ওদের সবার সাঁজবেলা এখন
এরপরই রাত্তির হবে।
ওরা তাই নিশ্চিত জানে এরপরই ভোর হবে।
আমার বিষন্ন বিকেল আটকে আছে মহাশূন্যের মাঝে।সাঁঝ নেই তাই তিমির আসেনা
ভোর আর কোথায় রবে?
ডানা ভাঙা পাখি একা দিনমান
থেকে যাবো নিস্তব্ধ পথের শেষে,
যদিও বা কিছুই চাইবার নেই আজ
তোমার সাথে তবু আমার জন্ম অভিমান।