সাব্বির হোসেন বাপ্পি’র গল্প || কে আপন, কে পর

জীবনের শেষ সময়টাতে এসে নিজেকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হচ্ছে আজ, কি পেয়েছিস তর এই ছোট্ট জীবনে। কি দিয়েছিস তর এই বিলাসিতা জীবনে।
কোন চাহিদার অপূর্ণ না রাখা ছেলেটি আজ বিরহের সাগরে ভেসে বেড়াচ্ছে। হয়তো কোন প্রিয়তমার মিথ্যে আশ্বাস নিয়ে। হয়তো বলেছিলো প্রিয়তমা টি জীবনের শেষ সময়টুকু পযর্ন্ত তার সাথে থাকবে, পারবে না কোন পৃথিবীর দানব তাদেরকে আলাদা করতে। জীবন যুদ্বে পরাজয় হয়ে আজ সে দুচোঁখে অশ্রু ঝরার নয়া পথিক হয়ে হেটে চলছে তার জীবনের হিসাব মিলাতে। হাজারও স্বপ্ন দেখানো সেই প্রিয়তমাটিকে না পাবার দুঃখে। নিজের মনকে মেনে নিতে পাচ্ছে না আজকে। হাজারও আপন মানুষদের কে রেখে আজ সে মরুভুমির সেই কঠিন পথের পথিক।কখনও গান খেয়ে, কখনও বাঁশি বাজিয়ে, কখনও বা আবেগে অশ্রু ভাসিয়ে বেঁচে আছে মরুভুমির সেই নিঠুর পৃথিবীতে। এমনটিই হয়েছিলো তার জীবনের সাথে। প্রিয়তমার মুখের কথায় আজও সে বেঁচে আছে প্রিয়তমার দেওয়া সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন কে বিশ্বাস করে। হয়তো বা প্রিয়তমাটি বলেছিলো,, যদি হাতটি ধরো, আমি হবো না তো অন্য কারো। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে,,শুধু অন্য কারো না, তার একটি সুন্দর পরিবার গড়ে তুলে ফেলেছে। সে হয়তো আরো বলেছিলো,,,সারাজীবন বুকের উপরে মাথা রেখে ঘুমাবে, দুজন দুজনা এরকম শপথ ও করে নিয়েছিলো। রাত নেই! দিন নেই,হাজার ও স্বপ্ন তারা বুনেছে,,হৃদয় নামের ছোট জমিতে, চৈত্রীমাখা রুদ্রুরে সে জমিন হয়তো ফেঁটে খা খা হয়ে গেছে। তারা বলেছিলো এ বন্ধন কভু ছিন্ন হওয়ার নয়। কিন্তু ভুল করে সে জমিনের হালচাষ করা কৃষকটি চায়নি তাদের এত সুন্দর মিলন টি। তাই হয়তো জমিনের ফসলটি অাজ চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে।ভালোবাসা এমনি হয়ে যায়,,যখন দুজন দুজনাকে বোঝতে শেখে,,তাদের জীবন সুন্দর করে সাজাতে একটি স্বপ্ন দেখে! তখনি পরিবার নামক শব্দটি তাদের মাঝে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তারা একটিবারের জন্য ভাবে না,যে হাজারও কষ্টে তারা সুন্দর একটি জমিন তৈরী করেছে তাদের হৃদয়ের মাঝে, সে কথা তারা কখনই ভাবতে চেষ্টা করেনি। ভাবতে চেষ্টা করেনি। কতটা বছর লেগেছে জমিনটি তৈরী করতে। কত হাজার বাঁধা পেরিয়ে যখনি সুন্দর একটি জমি তৈরী করতে পারে,,তখন অাপন বলতে পরিবার সেখানে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবেই। অপর দিকে পরিবারের কথায় সে প্রিয়তমাটি এক নিমিশে তার মনটাকে পাথর বানিয়ে ফেলবে,,ভুলে যাবে তাদের পুরনো এ্যালবামটি কি ঘটেছিলো অতীতে,,কি কথা ছিলো অতীতে, কি স্বপ্ন ছিলো অতীতে,জানেন এ সব কথা তখন ভুলে যাবে। যেমনটি করে সিনেমাতে দেখেছি, মাথায় আঘাত খেলে যেমন সব কিছু ভুলে যায়,ঠিক তেমনি কোন আঘাত না পেয়ে তখন প্রিয়তমাটি সব ভুলে যাবে। শেষ হয়ে যাবে তাদের সুন্দর করে সাজানো সেই হৃদয়ে জমিটি। পরিবারের সেই হাল চাষ কৃষকটির কারনে। এরকম কাহিনীর শিকার বরাবরি হচ্ছে আমাদের জীবনে,হয়তো সেই অশ্রু ঝরা নয়া পথিকের জীবনে এমনটি ঘটেছে। তাই সে আজ হাজারও পথ পারি দিয়েও মিলাতে পারছে না জীবনের হিসাব। পৃথিবীর রঙ্গ মঞ্চে দাঁড়িয়ে আজ সে ভাষণ দিচ্ছে! কে আপন, কে পর?